আফগানিস্তান থেকে ইউরেনিয়ামসহ বিরল ধাতু পাচার করছে মার্কিন সামরিক বাহিনী। আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ হেলমান্দ থেকে ইউরেনিয়ামসহ প্রাকৃতিক সম্পদ পাচার করা হচ্ছে বলে ধারণা ব্যক্ত করেছেন হেলমান্দ প্রদেশ থেকে নির্বাচিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আফগান সংসদের এক সদস্য। এদিকে, স্থানীয় অধিবাসীরা এ সংসদ সদস্যের বক্তব্যকে নিশ্চিত করেন। আফগানিস্তানের সবচেয়ে গোলযোগপূর্ণ প্রদেশগুলোর অন্যতম হেলমান্দ। হেলমান্দের খানাশিন গ্রামে ইউরেনিয়াম, ম্যাগনেটাইট, অ্যাপটাইট এবং কার্বোনাইটের খনি রয়েছে। গ্রামটি পাকিস্তান সীমান্ত থেকে মাত্র ১৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এর আগের ভূতাত্ত্বিক অনুসন্ধানে প্রদেশটিতে ইউরেনিয়াম এবং থোরোনিয়ামের মজুদ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া, এখানে ব্যাপক পরিমাণে টানটালুমসহ অন্যান্য বিরল ধাতুরও খোঁজ পাওয়া গেছে।
মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার হিসাবে এখানে ৮১ হাজার কোটির ডলারের বেশি মূল্যের তামা, লোহাসহ অন্যান্য ধাতুর মজুদ রয়েছে। হাল আমলের আগে আফগানিস্তানে শিল্প পর্যায়ে খনি থেকে ইউরেনিয়াম তোলার কোনো ব্যবস্থাই ছিল না। তালেবানের সময় বন্দিদের দিয়ে খনির কাজ করানো হতো। এদিকে, আফগানিস্তানের সংসদের নিম্নকক্ষ ওলেসি জিরগা বা গণ-পরিষদের সদস্যরা বারবার বলেছেন, খানাশিন গ্রাম থেকে মার্কিনীরা ইউরেনিয়াম পাচার করছে। মার্কিন মালবাহী বিমানযোগে ইউরেনিয়াম পাচার করা হয় বলে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। গণ-পরিষদের সদস্যরা আরো বলেছেন, ইউরেনিয়াম খনিগুলোর কাছেই ঘাঁটি স্থাপন করেছে মার্কিন বাহিনী। ইউরেনিয়াম পাচারে এ ঘাঁটি ব্যবহার হচ্ছে। ২০০১ সালে আফগানিস্তানে আগ্রাসন চালানোর পর থেকেই ইঙ্গ-মার্কিন বাহিনী হেলমান্দে ঘাঁটি স্থাপন করেছে বলেও জানান দেশটির সংসদ সদস্যরা। ব্যাপক পরিমাণ ইউরেনিয়াম সম্পদ মজুদের পাশাপাশি এখানে ব্যাপক ভিত্তিতে আফিম চাষও হয়। আফগানিস্তানের সিংহভাগ ভূখণ্ডের ওপর কাবুল সরকারের নামমাত্র নিয়ন্ত্রণ বজায় রয়েছে। তবে এই প্রদেশের ভূখণ্ডের ওপর কাবুল সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণই নেই। মার্কিন সামরিক ইউনিটগুলোই নিয়ন্ত্রণ করছে হেলমান্দ প্রদেশ ।