’ভালোবাসা’ সত্যিই বড়ই অদ্ভুত! ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দা ক্যারল সান্টা ফে-র প্রেমকাহিনী শুধু অদ্ভুতই নয়, বিরলও বটে। এ কাহিনী যত শুনবেন ততই বিষ্মিত হবেন। সালটা ২০১১, ক্যারল সান্টা ফে-র বয়স তখন মাত্র ৯। সেই প্রথম প্রেমে পড়া। তারপর থেকে একটু একটু করে প্রেমের উত্তাপে গলতে থাকেন তিনি। এ প্রেমের ভাগীদার কোনও পুরুষ নন, আস্ত একটা রেল স্টেশন। কী চমকে গেলেন? হ্যাঁ ঠিকই পড়ছেন। সান দিয়েগো শহরের সান্টা ফে স্টেশনের সঙ্গে তাঁর প্রেম পূর্ণতাও পেয়েছেন। আস্ত একটা স্টেশনকে নাকি বিয়েও করেছেন ক্যারল। বিয়ের পর পদবী রেখেছেন স্বামীর নামেই নাম হয়েছে ক্যারল সান্টা ফে।ওই স্টেশনের দুটি দেওয়ালের সংযোগস্থলের সঙ্গে নাকি তাঁর মধুচন্দ্রিমাও সারা হয়ে গিয়েছে ক্যারলের।
ক্যারল জানাচ্ছেন, “মাত্র ৯ বছর বয়সেই আমার এই স্টেশনকে ভাল লেগে যায়। ছোটবেলায় যখন এই স্টেশনের দেওয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়াতাম, তখনই মনে হত ও যেন আমার অভিভাবক, প্রকৃত বন্ধু।” এই স্টেশনে গেলে নাকি তাঁর যৌন আকাঙ্খাও জাগত। কিন্তু সেবার এক রেলকর্মী তাঁকে তাড়া করে স্টেশনছাড়া করেন।নগ্ন হওয়ার অনুমতি না মেলায় পোশাক পরেই স্টেশনের দেওয়ালগুলিকে ছুঁয়ে থাকেন উত্তাপ বিনিময় করতে। নিজেকে স্বঘোষিত ‘অবজেক্টাম সেক্সুয়াল’ বলে দাবি করেন ক্যারল। ক্যারল প্রতিদিনই তাঁর বাড়ি থেকে ৪৫ মিনিট বাসে আসেন ‘স্বামী’র সঙ্গে দেখা করতে। তিনি নাকি সান্টা ফে-র ‘প্রিন্সেস’। প্রথম জীবনে তিনি নাকি টম বলে এক ব্যক্তিকে বিয়ে করেছিলেন।
তবে সে বিয়ে সুখের হয়নি। তবে এখন ক্যারল সুখী তাঁর স্বামী সান্টা ফে রেল স্টেশনের সঙ্গে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্যারলের এই ‘ভালবাসা’ অদ্ভুত হলেও নজিরবিহীন নয়। ব্যক্তি নয়, কোনও বস্তুর প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার প্রবণতাকে বলে ‘অবজেক্টোফিলিয়া’। ক্যারল ওই প্রবণতায় আক্রান্ত। ২০০৯-এ এই প্রবণতার সন্ধান পান মার্কিন গবেষকরা। সহজ করে বললে, এই প্রবণতা একধরনের অটিজম। এর আগে ২০০৭-এ এরিকা আইফেল নামের এক মার্কিন মহিলা দাবি করেন, তিনি আইফেল টাওয়ারকে বিয়ে করেছেন। এই তালিকায় রয়েছে একলফ বার্লিনারের নামও, যিনি ১৯৭৯-এ বার্লিন প্রাচীরকে বিয়ে করেন।