আপনি আছেন » প্রচ্ছদ » খবর

হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় খাবেন যেসব খাবার

হরমোন হচ্ছে এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ যা গ্রন্থি হতে নিঃসারিত হয়ে বিভিন্ন শারীরিক ক্রিয়া বিক্রিয়া, বৃদ্ধি, রক্ত চাপ নিয়ন্ত্র, মাতৃদুগ্ধ তৈরী, যৌন পরিপক্কতা ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখে৷অন্তঃক্ষরা হরমোনের অণুগুলো রক্ত সংবহন তন্ত্রে সরাসরি নিঃসরিত হয়। অপরদিকে বহিঃক্ষরা হরমোনগুলো (এক্সোহরমোন) সরাসরি নালিতে, বা নালির মাধ্যমে নিঃসরিত হয়। এ ধরনের হরমোন সংবহন তন্ত্রের মাধ্যমেও নিঃসরিত হতে পারে, এছাড়াও ব্যাপন প্রক্রিয়ায় এক কোষ থেকে অন্য কোষেও এক্সোহরমোন পরিবাহিত হতে পারে।
আপনি হতাশায় ভুগবেন, না কি সুখে ভাসবেন তা অনেকটা নির্ভর করে শরীরে হরমোনের ক্রিয়াকলাপের ওপর। হরমোন এক ধরণের রাসায়নিক পদার্থ, যা আপনার শরীরের বার্তাবাহকের কাজ করে। জীবনের প্রতিটি পর্যায়েই আমাদের শরীরে হরমোনের ক্ষরণে পরিবর্তন আসে। এই পরিবর্তন আমাদের পরিপক্ক করে, প্রজননক্ষম করে। আমাদের পরিপাক, মানসিকতা ও শারীরিক উন্নতি হরমোনের ক্ষরণের ওপর নির্ভর করে।
হরমোন ঘটিত রোগ
থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা কমে যাওয়া
থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা বেড়ে যাওয়া(হাইপারথাইরয়ডিজম)
ডায়াবেটিস
ডায়াবেটিস রোগীর অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা
আমরা তখনই শরীর ও মনে সুস্থ থাকি যখন সকল ধরণের হরমোন সঠিক পরিমাপে ক্ষরণ হয়। কিন্তু হরমোন ক্ষরণের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেলেই আপনার কর্মক্ষমতা নষ্ট হবে,আপনি মানসিকভাবেও অক্ষম হয়ে পড়বেন।
শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা বুঝার কয়েকটি সহজ উপায় আছে।
উপায়গুলো হলো-
পরিপাক সমস্যা হরমোনের ভারসাম্যহীনতা বোঝার আট উপায়
পরিপাক সমস্যা
১.পরিপাক সমস্যা:
নিয়মিত খাবার খাওয়ার পরও যদি পরিপাক সমস্যা চলতেই থাকে তাহলে বুঝতে হবে যে, আপনার শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেছে। এ সমস্ত ক্ষেত্রে আপনাকে খাবারের তালিকায় বৈচিত্র্য আনতে হবে। তবে বৈচিত্র্য আনতে গিয়ে কোন অস্বাস্থ্যকর খাদ্য যেন আপনার তালিকায় ঢুকে না যায়।
২. যৌনতায় অনীহা:
যৌনতায় অনীহা হরমোনের ভারসাম্যহীনতা বোঝার আট উপায়
যৌনতায় অনীহা
যৌনতায় অনীহা সৃষ্টি হলে অনেকটাই নিশ্চিত করে বলা যায় যে, আপনার শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হয়েছে। যথেষ্ট পরিমাণ ঘুম না হলে আপনার শরীরে সেক্স হরমোন ক্ষরণ অনিয়মিত হয়ে পড়ে। তাই,আপনার ঘুমের নিয়ম নিয়ে ভাবুন। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম নিশ্চিত করুন।
৩. আড়ষ্টতা:
যদি কোন কাজ শেষ করার আগেই ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন, কাজের গতি ধীর হয়ে পড়ে তাহলে বুঝে নিবেন যে, আপনার শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হয়েছে। এই ধরণের সমস্যা হলে, খাদ্য তালিকায় পুষ্টিকর খাবার রাখুন আর গম ও শস্যদানা জাতীয় খাবার নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করুন।
৪. হতাশা:
হতাশা হরমোনের ভারসাম্যহীনতা বোঝার আট উপায়
হতাশা
শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলে নিজেকে হতাশ ও বিচ্ছিন্ন মনে হতে থাকে। যদি অন্য কোন রোগে না ভুগেন তাহলে মনে করতে হবে, আপনার খাদ্যভ্যাসে হেরফের হয়েছে। নিজের শরীরটাকে বোঝার চেষ্টা করুন। শরীরের জন্য পর্যাপ্ত ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করুন।
৫. অস্বাভাবিক খাদ্যাভ্যাস:
অস্বাভাবিক খাদ্যাভ্যাস হরমোনের ভারসাম্যহীনতা বোঝার আট উপায়
অস্বাভাবিক খাদ্যাভ্যাস
এমন হতে পারে যে, আপনার অস্বাভাবিকভাবে ক্ষুধা লাগছে। কখনও কখনও প্রয়োজনের তুলনায় বেশি খেতে ইচ্ছে করছে। এই লক্ষণগুলোও হরমোনের ভারসাম্যহীনতার লক্ষণ। এই ধরণের সমস্যা হলে, চিনিজাতীয় পদার্থ কম গ্রহণ করা, মদ্যপান কমিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে পারেন।
৬. ঘাম:
শরীর রাতের বেলায় ঘামলে ও উত্তাপ বেড়ে গেলে আশঙ্কার কারণ আছে যে,হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেছে। নিজের দৈনন্দিন অভ্যাসের তালিকা তৈরী করুন। কি ধরণের খাবার ও পরিস্থিতিতে আপনার মনে কেমন প্রভাব সৃষ্টি হয় তার একটি তালিকা করুন। যেগুলোতে সমস্যা সৃষ্টি হয় সেগুলো পরিহার করে চলুন।
৭. কালানুক্রমিক মানসিক চাপ:
পালা করে যদি মানসিক চাপে ভুগতে হয় তাহলেও শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। মানসিক চাপ মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করুন। নিজের আশপাশের পরিবেশটা বদলান, খাদ্য তালিকায় পুষ্টিকর খাবার রাখুন।
৮. ওজন বেড়ে যাওয়া:
ওজন বাড়া হরমোনের ভারসাম্যহীনতা বোঝার আট উপায়
ওজন বাড়া
স্বাস্থ্যকর খাবার ও শারীরিক পরিশ্রম করার পরও ওজন বেড়ে যাওয়াও হরমোনের ভারসাম্যহীনতার লক্ষণ। কারখানায় প্রস্তুত খাদ্যদ্রব্য, চিনিজাতীয় খাদ্য ও আটা পরিহার করুন। নিজের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায়ও পরিবর্তন আনুন।
আরো জানুন

 

হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় খাবেন যে সব খাবার

 

বাদাম

বাদামের মধ্যে রয়েছে লিনোলেইক এসিড এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি। এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। বাদাম শরীরের হরমোন নিঃসরণ বাড়িয়ে এর ভারাসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। হরমোনের ভারাসাম্য বজায় রাখতে কাঠবাদাম, ওয়াল নাট, পাইন বাদাম ইত্যাদি খেতে পারেন।

অ্যাভোকাডো, মিষ্টি আলু

অ্যাভোকাডো এবং মিষ্টি আলুর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি৬। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই ভিটামিনের অভাবের সাথে মেয়েদের প্রোজেস্টেরন হরমোনের ভারসাম্যহীনতার সম্পর্ক রয়েছে। এটি পুরুষদের শুক্রাণু উৎপাদনেও জরুরি। তাই হরমোনের ভারাসাম্য রক্ষায় সাহায্য করতে এই খাবারগুলো খেতে পারেন।

কলা, গাজর

কলার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি৬। এটি হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া গাজরও ভিটামিন বি৬-এর ভালো উৎস। তাই এটিও খেতে পারেন।

ফ্ল্যাকস সিড

ফ্ল্যাকস সিডের মধ্যে রয়েছে লিনোলেইক এসিড। এটি মেয়েদের প্রোজেস্টেরন হরমোন তৈরিতে সাহায্য করে। তাই ফ্ল্যাকস সিডও খেতে পারেন হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখার জন্য।