কামব্যাকের সময়ই যুবরাজ বলেছিলেন, আবার ধোনির সঙ্গে জুটি বেঁধে বড় বড় ছক্কা মারবেন তাঁরা। তা যে স্রেফ কথার কথা নয় তা পুণে দেখতে না পেলেও, দেখল বারবাটি। ইংল্যাডের বিরুদ্ধে একদিনের সিরিজের প্রথম ম্যাচে দুজনেই ব্যর্থ হয়েছিলেন। দ্বিতীয় ম্যাচে দুজনেই দারুণভাবে সফল। তাও এমন একটা সময় যখন বিরাট কোহলি-সহ তিন উইকেট হারিয়ে ক্রমশ চাপ জাঁকিয়ে বসছে ভারতীয় দলের স্নায়ুতে। কিন্তু ধোনি-যুবরাজ জুটি যে কোনও দিন যে কোনও দলের বোলারদের কাছে বিভীষিকা হয়ে উঠতে পারে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সে ২০১১ সাল হোক বা ২০১৭- একই রকম পরিত্রাতার ভূমিকায় তাঁরা।
এদিন যুবরাজের খেলা দেখলে কে বলবে যে, ছ’বছর পর সেঞ্চুরি করলেন তিনি! বরং মনে হল যেন সেই বিগত বিশ্বকাপের আগুনে ফর্মেই রয়েছেন। ফর্ম সাময়িক, কিন্তু ক্লাস চিরকালীন- ক্রিকেটে প্রায় ক্লিশে হয়ে যাওয়া কথাটিকে তিনি আবার নতুন করে মনে করিয়ে দিলেন। আসলে স্কোরবোর্ডে তাঁর নামের পাশে ১৫০ লিখে রাখলেও, তা যেন আরও অনেক অনেক গুণ বেশি। জীবনের যে লড়াই তিনি জয় করে ফিরে এসেছেন তারও হিসেব নিকেশ যেন লেখা থাকল তাঁর প্রতিটি রানে। আর যাঁরা বলেছিলেন, অধিনায়কত্ব ছাড়ার পর এবার নিজের খেলাটা অনেক হাত খুলে খেলতে পারবেন ধোনি, তাঁরাও যে ভুল বলেননি আজ বোঝালেন ধোনি। লোকেশ রাহুল, ধাওয়ান, কোহলিকে ঝটপট প্যাভিলিয়নে ফিরিয়ে ভাল ধাক্কাই দিয়েছিলেন ইংরেজ বোলাররা। ধোনি-যুবরাজের মারমুখী মেজাজে ম্যাচের রংটাই বদলে গেল। যুবরাজের ১৫০(১২৭ বলে) আর ধোনির ১৩৪(১২২ বলে) ভারতকে লড়াইয়ের প্রচুর রসদ জুগিয়ে দেয়। তবে ব্যাটিং সহায়ক পিচে রুট, জেসনরাও যে ছেড়ে কথা বলবেন না তাও অনুমান করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা।
জেসন আর রুট যেভাবে খেলছিলেন, তাঁতে বিশেষজ্ঞদের ধারণা খুব একটা ভ্রান্ত বলে মনে হচ্ছিল না।এবার পরিত্রাতা হলেন জাদেজা ও অশ্বিন। মাঝেমধ্যে প্রতিরোধ গড়ে তুললেও ভারতীয় বোলাদের যে খুব সমস্যায় ফেলেছেন মর্গ্যানরা তা বলা যায় না। ৪১ ওভারে জাদেজা ক্যাচ না মিস করলে হয়তো ম্যাচ আরও আগেই শেষ হত। মইন আলিকে সঙ্গে নিয়ে ক্যাপ্টেন মর্গ্যান ঘর সামলানোর অনেক চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচেও বিরাটবাহিনীর কাছে হার মানতে হল তাঁদের।
রান তাড়া করায় ভারতের রেকর্ড ঈর্ষণীয়। আর তাই টসে জিতে এদিন বিরাটদের ব্যাট করতে পাঠান মর্গ্যান। পরে বল করেও এই জয় তাই ভারতীয় দলের ভারসাম্যটিকে অনেক বেশি জোরদার করল। এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ পকেটে পুরে ফেললেন ক্যাপ্টেন কোহলি। পরবর্তী ম্যাচে বিরাটরা যে অনেকটা আত্মবিশ্বাসী আর আগ্রাসী হয়েই ঝাঁপাবেন, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।