ঘরোয়া ক্রিকেটের বৃহৎ আয়োজন বিপিএল উপস্থাপনা দিয়েই আলোচনায় এসেছেন মিষ্টি মেয়ে আমব্রিন। যা চলছে এখনও। এবার দ্বিতীয়বারের মতো বিপিএলের চতুর্থ আসর উপস্থাপনা করছেন তিনি। আর এতেই নতুন করে এসেছেন আলোচনায়। এ আলোচনা ছড়িয়েছে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশের মাটিতেও। শুধু উপস্থাপনা দিয়েই আলোচিত হচ্ছেন তা কিন্তু নয়। এর পিছনে ভিন্ন কিছু কারণও রয়েছে। সেটি হল তার ফ্যাশন।
বিপিএল আসরে যারা গ্যালারিতে বা টিভি সেটের সামনে বসে উপভোগ করছেন তারা আমব্রিনের মনোমুগ্ধকর উপস্থাপনার পাশাপাশি তার ফ্যাশন সচেতনা দেখেও অভিভূত হচ্ছেন। আমব্রিনের এই ফ্যাশন নিয়ে ফোন আসছে ভারতসহ অনেক দেশ থেকেই। এতে বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠানের মডেলরা তার পোশাক ও হেয়ার স্ট্যাইলের প্রশংসা করেছেন। বিষয়টি জানালেন আমব্রিন নিজেই। তাদের মধ্যে অনেকেই আবার অবাক হচ্ছেন বাংলাদেশী মেয়ের এমন ফ্যাশন সচেতন হওয়া দেখে। সত্যিই এর আগে দেশে এমন স্ট্যাইলিশ উপস্থাপিকা খুঁজে পাওয়া ছিল দুষ্কর। শুধু কী স্ট্যাইলিস্ট! কথার পীঠে কথা সাজিয়ে উপস্থাপনায় ভিন্ন মাত্রা দিয়ে দর্শকদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে জুড়ি নেই আমব্রিনের। উপস্থাপনায় নয়, ব্যক্তি আমব্রিনও চমৎকার একজন মানুষ। মিষ্টি কথায় অল্পতেই অন্যদের সঙ্গে মিশে যাওয়ার ক্ষমতা রয়েছে এ মডেল কন্যার।
উপস্থাপনা, অভিনয় ও মডেলিং সব জায়গাতে সরব উপস্থিতি এ তারকার। কাজ নিয়ে হাজারো ব্যস্ততা থাকলেও নিয়মের মধ্যে দিয়ে যাপিত জীবন পার করেন আমব্রিন। কথা রাখাটাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বের দৃষ্টিতে দেখেন এ তারকা। নিজের সব কাজই ঠিক সময়ে করাটাকে অভ্যাসে পরিণত করে নিয়েছেন তিনি। সময়ের প্রতি আনুগত্য প্রকাশের ভাবটা এখনকার শিল্পীদের মধ্যে দেখা না গেলেও তার মধ্যে এমনটি নেই। বিপিএলের ব্যস্ততা থাকা সত্ত্বেও যে টাইমে কথা বলবে বলে কথা দিয়েছিলেন ঠিক সে টাইমে সব ব্যস্ততা ছেড়ে চলে এলেন পাশে। প্রাণ খুলে দিলেন আড্ডা। জানালেন আজকের আমব্রিন হওয়ার গল্প। ২০০৭ সালে লাক্স চ্যানেলে আই প্রতিযোগিতায় শীর্ষ দশে ঠাঁই হয়েছিল আমব্রিনের। সেটিকে পুঁজি করেই সামনে এগিয়ে চলার ছক এঁকেছিলেন তিনি। নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে সেই ছকেই হেঁটেছেন এ তারকা এবং এখনও হাঁটছেন বলে জানালেন। ক্যারিয়ারের একেবাইরে শুরুতে ‘চলো বিয়ে করি’ নামে আফজাল হোসেন পরিচালিত একটি নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমেই নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পান আমব্রিন। এরপর আর তাকাতে হয়নি পিছনে। একের পর এক নাটকে অভিনয় করে চলেছেন। পাশাপাশি কাজ করেছেন বিজ্ঞাপনেও।
তানভীর হাসানের নির্দেশনায় বাংলা লিংকের কল ব্লকের কমার্শিয়াল বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেই বিজ্ঞাপন জগতে পা রাখেন তিনি। রাতারাতি হয়ে যান বিজ্ঞাপন কন্যা। এ পর্যন্ত প্রায় দুই ডজন বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। অভিনয়ের মতো বিজ্ঞাপনেও তার শৈল্পিক উপস্থিতি লক্ষণীয়। তবে এ দুই পরিচয়ের বাইরে বর্তমানে যে পরিচয়টিই আমব্রিনের সবচেয়ে বেশি প্রচার পাচ্ছে, সেটি হল উপস্থাপক। এ সময়ে যা সবচেয়ে বেশি দেখা যায় তা হচ্ছে উপস্থাপনা। এ মাধ্যমে তার উপস্থিতি দর্শককে মুগ্ধ করছে নিয়মিত। প্রথম উপস্থাপনা করেন এনটিভি’র ‘মিউজিক-ই ফোনি’ অনুষ্ঠানে। এতে টানা দু’বছর উপস্থাপনা করে বেশ দর্শকপ্রিয়তা পান তিনি।
তাই এ মাধ্যমেই ব্যস্ততা বাড়ছে তার। বেশ কয়েকটি চ্যানেলে একাধিক অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করছেন তিনি। পাশাপাশি দেশের বড় বড় ইভেন্টগুলোরও উপস্থানার দায়িত্বও আসে তার কাঁধে। দেশ-বিদেশী শিল্পীদের নিয়ে আয়োজিত বেশিরভাগ অনুষ্ঠানের সঞ্চালনের ভূমিকায় আমব্রিনের নামটিই আগে উঠে। বিন্দাস হয়ে চলাফেরা করাতেই ভালো লাগে তার। ফ্যাশনে ব্যাপক এক্সপেরিমেন্ট করতেও ভালোবাসেন। দেশ-বিদেশী কোনো তারকাকে অনুকরণের চেষ্টা তার নেই। বরং তার ফ্যাশন যাতে অন্যরা ফলো করে সেটাই সবসময় করেন তিনি। নিজের মেকআপ-গেটআপ নিয়ে তার বিস্তর গবেষণা। এ বিষয়ে বিদেশ থেকে রূপসজ্জার ওপর কোর্সও করে এসেছেন। ইন্টেরিয়র আর্কিটেক্চার বিষয়ে পড়াশোনা করলেও মিডিয়াতে কাজ করাকেই জীবনের ব্রত হিসেবে নিয়েছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে আমব্রিন বলেন, ‘মিডিয়া আমার অনেক ভালো লাগার। আজীবন এখানেই থাকতে চাই।’ তাই বর্তমানে নিজের উপস্থাপনার পরিধিটা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ছড়িয়ে দেয়ার স্বপ্ন দেখছেন এ তারকা। প