এইমাত্র পাওয়া

  • কাপ জিতেই ছাড়ব, জন্মদিনে শপথ মেসির
  • প্রাথমিকে ১২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জুলাইয়ে, থাকছে ৬০% নারী কোটা
  • ঝালকাঠিতে সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন ধ্রুবতারা’র দোয়া ও ইফতার অনুষ্ঠান
  • ঝিনাইদহে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সেমিনার
  • দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে
  • ফাঁটা পায়ের যত্নে কিছু পরামর্শ !!
  • ডায়াবেটিস রোগীরা কি রোজা রাখতে পারবে?
  • ওজন কমাবে কালো জিরা
  • হলুদ দাঁতের সমস্যা সমাধান করুন নিমিষেই
  • কিশিমিশের পানি খেলে যে উপকার পাবেন
Updated

খবর লাইভ

ফেসবুকে আসক্ত স্ত্রীকে খুন করে স্বামীর আত্মহত্যা

21 January 2017 01:01:36 AM 15853700 ভোট:5/5 1 Comments
Star ActiveStar ActiveStar ActiveStar ActiveStar Active
ফেসবুকে আসক্ত স্ত্রীকে খুন করে স্বামীর আত্মহত্যা

ফেসবুকে নিজেদের ব্যক্তিগত জীবনকে সবার সামনে প্রকাশ করে দিতেন স্ত্রী, এই রাগে তাঁকে খুন করে নিজেও আত্মঘাতী হয়েছেন ভারতের পুণে শহরের বাসিন্দা এক যুবক।

ফেসবুকে নিজের দৈনন্দিন জীবন নিয়ে নানা পোস্ট দেওয়ার ফলে বিভিন্ন অপরাধ এর আগে ঘটলেও তা থেকে খুন আর আত্মহত্যা এই প্রথম বলে পুণের পুলিশ জানিয়েছে।

মনোবিদরা বলছেন সামাজিক মাধ্যমে নিজের জীবনকে সবার সামনে উন্মুক্ত করে দিয়ে ভার্চুয়াল বন্ধুদের অনুপ্রেরণা নিয়ে বেঁচে থাকার এই প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে। অনেকেই ভুলে যাচ্ছেন ব্যক্তিগত তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করার সীমারেখাটা কোথায়।

পুণে শহরের পুলিশ বলছে তারা একটি বন্ধ ফ্ল্যাট থেকে ওই দম্পতির মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ বলছে ২৮ বছর বয়সী স্ত্রী সোনালীকে হত্যা করে নিজেও গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ৩৪ বছরের রাকেশ গাঙগুর্দে।

মৃতদেহ দুটির সঙ্গে পাওয়া গেছে একটি সুইসাইড নোট, যাতে রাকেশ লিখেছেন যে তাঁদের দাম্পত্য জীবনের অতি ব্যক্তিগত তথ্য সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে দিতেন তাঁর স্ত্রী। এ নিয়ে অনেকবার সতর্ক করলেও কথা শোনেন নি সোনালী, সে জন্যই এই চরম সিদ্ধান্ত নিতে হল বলে সুইসাইড নোটে লিখে গেছেন রাকেশ গাঙগুর্দে।

পুণে পুলিশ ক্রাইম ব্যাঞ্চের সাইবার সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডেপুটি কমিশনার ডি কে সাকোরে বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, "সামাজিক মাধ্যমে পোস্টের কারণে খুনের ঘটনা তো এই প্রথম হল এখানে, তবে আরও বহুধরণের সাইবার অপরাধ হচ্ছে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীদের নিজেদের দেওয়া পোস্টের কারণেই। পরিবারের সঙ্গে কোথায় বেড়াতে যাওয়ার কথা জানাবার ফলে বাড়িতে চুরি হওয়া থেকে শুরু করে কমবয়সী মেয়েদের মোবাইল নম্বর প্রকাশিত হয়ে যাওয়া, বিয়ের নাম করে ধোঁকা দেওয়া - কী না হচ্ছে।"

তাঁর কথায়, "ভার্চুয়াল জগতে নিজের জীবনের সব তথ্যই যদি প্রকাশ করে দেওয়া হচ্ছে, কেউ আর ব্যক্তিগত - অপ্রকাশিতব্য রাখছে না কিছু। মানুষ যাতে নিজেরাই চিন্তাভাবনা করে, সেন্সর করে পোস্ট বা কমেন্ট দেন - সে ব্যাপারে পুলিশ নিয়মিত প্রচারও চালাচ্ছে। কিন্তু তারপরেও এমন ঘটনা হয়ে গেল।"

মি. গাঙগুর্দে নিজের জীবন শেষ করে দেওয়ার আগে সুইসাইড নোটে যা লিখে গেছেন, সেটাই স্ত্রীকে হত্যার মূল কারণ না কি এর পেছনে অন্য কিছু আছে, তা পুলিশ এখনও তদন্ত করে দেখছে। তবে পুলিশ এটা জানতে পেরেছে যে ওই দম্পতির মধ্যে সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট নিয়ে নিয়মিত ঝগড়া হত।

নিয়মিত ফেসবুক ব্যবহারকারী, কলকাতার গৃহবধূ সংযুক্তা সরকার বলছিলেন কতটা পোস্ট করা উচিত, কাদের জন্য কোন ছবি দেওয়া উচিত, এগুলো নিয়ে নিজেদেরই সতর্ক থাকতে হবে।

"সামাজিক মাধ্যমে নিজেকে প্রকাশ করার একটা সীমা তো নি:সন্দেহে রাখা উচিত। বন্ধু নির্বাচন থেকে শুরু করে ছবি পোস্ট করা - সব বিষয়েই সচেতন থাকা উচিত আমাদের। কতটা আমি প্রকাশ করব, কোন ছবি কোন বন্ধুদের জন্য দেব, সেটা একটু চেষ্টা করলেই কিন্তু ঠিক করে ফেলা যায়। আসলে নিজে একটু সচেতন থাকলেই যতটা পরিসরের মধ্যে আমি থাকতে চাই, তার মধ্যেই কিন্তু থাকা যায়। আমরা তো অনেক সময়ে হুজুগে অনেক কিছু করে ফেলি, খেয়াল রাখি না কী করছি," বলছিলেন মিসেস সরকার।

দাম্পত্য জীবনের একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য বা যেখানেই যাচ্ছেন, যা করছেন, যা খাচ্ছেন - এ সবই জগতের সামনে প্রকাশ করে দেওয়ার পেছনে কোন মানসিকতা কাজ করে? জানতে চেয়েছিলাম কলকাতার মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ইন্দ্রনীল সাহার কাছে।

"এটাকে নার্সিসিজম বলা হয়। এটা এমন এক মানসিকতা, যেখানে নিজেকে জাহির করা, নিজের সব কিছু ভাল বলে মনে করা, আর সেগুলো সবাইকে দেখিয়ে বাহবা পাওয়ার চেষ্টা করে মানুষ। সেই মানসিকতা থেকেই যেমন ঝুঁকি নিয়ে মানুষ সেলফি তুলে পোস্ট করে, তেমনই সব ব্যক্তিগত কথাও প্রকাশ করে দেয় ভার্চুয়াল বন্ধুদের কাছ থেকে লাইকের মাধ্যমে অনুপ্রেরণা পাওয়ার আশায়",বলছিলেন ড. সাহা।

সত্যিকারের আত্মীয়-বন্ধুদের বদলে সামাজিক মাধ্যমের বন্ধুদের কাছ থেকে লাইকের ওপরে ভরসাতেই বেঁচে থাকার এই নতুন নেশার কবলে পড়ছেন বহু মানুষ - এমনটাই মত মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশের।

- বিবিসি বাংলা

Loading...
advertisement
সর্বশেষ সংবাদ
এ বিভাগের সর্বশেষ