সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির শূন্য পদের জন্য বস্তা বস্তা আবেদনপত্র জমা পড়ে থাকলেও নিয়োগের জন্য পদক্ষেপ নেই অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের। আজ মঙ্গলবার দশম জাতীয় সংসদের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ১৮তম বৈঠকে এ তথ্য উঠে এসেছে। জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন। সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের বিভিন্ন শূন্য পদের সংখ্যা এবং শূন্য পদ পূরণের জন্য মন্ত্রণালয়ের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ ও ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অফিস কাম কমিউনিটি হল প্রকল্পের কাজের অগ্রগতির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কমিটির একজন সদস্য জানান, বৈঠকে সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের বিভিন্ন পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। তবে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির পদ সম্পর্কে কমিটিকে জানানো হয়েছে, এই পদের জন্য বস্তা বস্তা আবেদনপত্র জমা পড়ে আছে। কিন্তু কার্যকরি পদক্ষেপ নেই। কমিটি সূত্রে জানা যায়, সমাজ কল্যাণ অধিদপ্ততরের অতিরিক্ত পরিচালকের পদ ১টি। কিন্তু পদোন্নতির পদ বলে এ মুহূর্তে উপযুক্ত কর্মকর্তা না থাকায় পদটি পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া উপপরিচালকের ৮৪টি পদ শূন্য রয়েছে। এবং এগুলো পূরণে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, যা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সহকারী পরিচালকের পদে ইতিমধ্যে সমাজসেবা অফিসার/সমমান পদধারীদের মধ্য হতে ১০৩টি সহকারী পরিচালকের শূন্য পদে পদায়নের মাধ্যমে পূরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া সমাজসেবা অফিসার/সমমান পদ শূন্য রয়েছে ৩০৪টি। প্রথম শ্রেণীর সরাসরি ১০৯টি পদে নিয়োগের জন্য পিএসসিতে প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে বলে বৈঠকে জানানো হয়। ১৬টি পদে সহসাই ছাড়পত্র সংগ্রহপূর্বক নিয়োগের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ৪০ জন ২য় শ্রেণি থেকে ১ম শ্রেণিতে পদোন্নতির জন্য পিএসসিতে যাচিত তথ্যের জবাব পাঠানো হয়েছে। আরো ২৫ জন ২য় শ্রেণি থেকে ১ম শ্রেণিতে পদোন্নতি দেওয়ার জন্য সুপারিশের ভিত্তিতে পিএসসিতে পাঠানোর জন্য মন্ত্রণালয়ের প্রক্রিয়া চলছে। কমিটির এক সদস্য জানান, দ্বিতীয় শ্রেণির শূন্য পদের সংখ্যা ১২০টি। ৬০টি শূন্য পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করার জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের স্মারক নম্বর-৬৫৮ যোগে গত ৩০ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে পিএসসিতে পত্র পাঠানো হয়েছে। পদোন্নতির যোগ্য অবশিষ্ট শূন্য ৬০টি পদে যোগ্য প্রার্থী পাওয়া সাপেক্ষে পুনরায় পদোন্নতির প্রস্তাব পাঠানো হবে। এ ছাড়া ৩য় শ্রেণীর ৬২৭টি পদ শূন্য রয়েছে। ১১৯টি পদে নিয়োগের নিমিত্তে চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত আবেদন পাওয়া গেছে। সহসাই আবেদনপত্রগুলো গণনাসহ যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শুরু করা হবে। অবশিষ্ট শূন্য পদ ধরন অনুযায়ী নিয়োগের প্রক্রিয়া নেওয়া হবে। ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী পদে শূন্য আসনের সংখ্যা ১৯১টি। এতে ১৬০টি পদে নিয়োগের নিমিত্তে ২১ জানুয়ারি ২০১৬ পর্যন্ত আবেদন পাওয়া গেছে। আবেদনপত্রগুলোরও যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শুরু করা হবে। এ ছাড়া অবশিষ্ট শূন্য পদের ধরন অনুযায়ী নিয়োগের প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হবে। বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, যতগুলো শূন্য পদ তৈরি হয়েছে সেগুলোতে দ্রুত নিয়োগ দিতে কার্যকরি পদক্ষেপ নিতে সুপারিশ করেছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। এ ছাড়া কমিটি পথশিশুদের জীবনমান উন্নয়নে এবং ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের সুরক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠিত ‘শেখ রাসেল প্রশিক্ষণ ও পূর্নবাসন কেন্দ্রে’র সেবার মান বাড়ানো এবং পথশিশুদের নিয়ে যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ করে সেসব প্রতিষ্ঠানের বরাদ্দ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। বৈঠকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে সুইট বাংলাদেশের শিক্ষক নিয়োগে তদারকি করা এবং সরজমিনে পরিদর্শন করে রিপোর্ট প্রদানের সুপারিশ করা হয়। কমিটি জাতীয় সমাজ কল্যাণ পরিষদ থেকে যে অনুদান দেওয়া হয় তার খাত ভিত্তিক বরাদ্দ ও ব্যয়ের রিপোর্ট কমিটিতে উপস্থাপনের সুপারিশ করে। কমিটির সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল, আয়েশা ফেরদাউস, মো. হাবিবে মিল্লাত, মো. আব্দুল মতিন ও লুৎফা তাহের বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। এ ছাড়া সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব চৌধুরী বাবুল হাসান, সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন