এই ব্রহ্মাণ্ডে পৃথিবী ছাড়া আর কোথাও কি প্রাণ আছে? আছে কি বুদ্ধিমান প্রাণী? তারাও কি তাদের গ্রহের বাইরে অন্যত্র প্রাণ আছে কি না সেই প্রশ্নে আকুল? আমেরিকায় ১৯৬০ সালে সূচনা হয়েছিল ‘সেটি (SETI) ইনস্টিটিউট’-এর। ভিন গ্রহে বুদ্ধিমান প্রাণীর অন্বেষণ, ‘সার্চ ফর এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল ইনটেলিজেন্স’, সংক্ষেপে ‘সেটি’ (SETI)। মহাশূন্য থেকে ভেসে আসা সংকেত বিশ্লেষণ করে সেগুলি কোনও উন্নত চেতনাসম্পন্ন প্রাণীর সৃষ্টি কি না তা বোঝার চেষ্টা করা ছিল এই প্রকল্পের একটা উদ্দেশ্য। ভিনগ্রহের বাসিন্দাদের উদ্দেশে পৃথিবী থেকে বেতারতরঙ্গ মারফত কিছু বার্তাও পাঠানো হয়েছে, তার মধ্যে আছে বিটলস-দের গাওয়া একটা গান! তবে, সেটি ইনস্টিটিউট বা ভিনগ্রহে বুদ্ধিমান প্রাণীর অন্বেষণে অন্যান্য উদ্যোগ সাধারণের কল্পনায় ঢেউ যতটা তুলত,
এটাই বিস্ময়। মাত্র কিছুদিন আগে হকিং ভিনগ্রহবাসীদের উদ্দেশে বার্তা পাঠানোকে নির্বুদ্ধিতা বলে চিহ্নিত করেছিলেন। কারণ, তিনি মনে করেন না, পৃথিবীতে এসে পৌঁছনো ভিনগ্রহের প্রাণী— ধরে নেওয়া যায় তারা আমাদের থেকে প্রযুক্তিতে অনেক গুণ উন্নত হবে, নইলে আমাদের কাছে পৌঁছনো সম্ভব হত না— তাদের সঙ্গে আমাদের সাক্ষাত্ খুব নিরাপদ হবে। খোদ মানুষের ইতিহাসই বলছে, বিভিন্ন অনুন্নত জাতির সঙ্গে ইউরোপীয়দের পরিচয় তাদের কাছে কীরকম কালান্তক হয়ে উঠেছিল। হকিং-এর মতে, আমাদের উচিত হবে, মহাবিশ্বের দূর-অধিবাসীদের কাছে আমাদের নিজেদের উপস্থিতি বিন্দুমাত্র জানান না দেওয়া। বরং নীরব শ্রোতা হয়ে থাকা ভাল। বলা বাহুল্য আমরা চাই বা না চাই ইতিমধ্যেই আমাদের প্রযুক্তির পরিচয় নিয়ে বহু তরঙ্গ মহাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। যথেষ্ট দক্ষ যে কোনও বুদ্ধিমান প্রাণী তা থেকে আমাদের অবস্থান টের পেয়ে যাবে।