আপনি আছেন » প্রচ্ছদ » খবর

মধ্যবয়সী নারীর বয়সের ছাপ কামাতে কিছু টিপস

মনের দিক থেকে যতই তরুন থাকুন না কেন, আপনার স্কিন কিন্তু তার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না। হঠাৎ একদিন সকালে আয়নায় যখন চোখের কোণে কটা ভাঁজ, রাফ স্কিন বা হালকা তিল দেখতে পান “অ্যান্টি-” শব্দটাই যেন আয়না থেকে আপনার চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে থাকে। কিন্তু আমাদের দেশের নারীদের সমস্যা হল তারা সব সমস্যা মেক-আপ দিয়ে সমাধান করতে পারলেই খুশি হন।

তিল পড়েছে? ফুল কাভারেজ প্যানকেক চাই। চোখের কোণে ভাঁজ? -কন্সিলার খোঁজ… কিন্তু মনে রাখবেন দিন শেষে এই মেক-আপ তুলে ফেললে অবস্থা আগের চেয়ে খারাপ বই ভালো দেখবেন না। নিজেকে প্রশ্ন করে দেখুন তো? মেক-আপ ছাড়া সেলফি তোলার বা আপলোড করার কনফিডেন্স আছে কিনা আপনার? উত্তর যদি না হয়, আপনার বোধহয় এখনি স্কিনকেয়ার নিয়ে সিরিয়াস হওয়া উচিত।

কী? ভয় পাইয়ে দিলাম? আপনি যদি সঠিক সময়ে সঠিক সমস্যার সমাধান করতে পারেন তবে ভয় পাওয়ার কোন প্রয়োজন নেই। এতে বয়স বাড়ার সাথে সাথে মেক-আপের পুরু স্তরের আড়ালে লুকাতেও হবে না, সাথে সাথে পাবেন দীর্ঘ দিন ধরে গ্লোয়িং স্কিন যাকে বলে কিনা aging gracefully..

শুরু করার সঠিক সময়

এই ব্যাপারটা একজন থেকে অন্যজনে আলাদাই হয়। কিন্তু আপনার দেহের OESTROGEN ২১ বছর বয়সেই পিক পয়েন্টে চলে যায়। সুতরাং এর পরে যে কোন সময় থেকেই অ্যান্টি-এজিং স্কিন কেয়ার শুরু করতে পারেন। আজকাল শহুরে পরিবর্তনশীল লাইফস্টাইল আর স্ট্রেসের কারণে সবার স্কিন খুব দ্রুত বুড়িয়ে যেতে শুরু করে। যারা খুবই স্ট্রেসফূল লাইফের অধিকারী তাদের ২৫ বছর কিংবা তাঁরও আগে থেকে অ্যান্টি-এজিং স্কিন কেয়ার শুরু করা উচিত।

ত্বক বুড়িয়ে যাওয়ার লক্ষণ গুলোঃ

১। বাংলাদেশী নারীর ত্বক বুড়িয়ে যাবার প্রধান লক্ষণ হচ্ছে ‘এজ স্পট’ বা ‘তিল’। এগুলো প্রথমে হালকা থাকে এরপর যত্ন না নিলে গাঢ় রং ধারণ করে। শুধু তিল কীভাবে সারাবো এরকম প্রশ্ন না করে ত্বক আপনাকে যা বলতে চাইছে তা বোঝার চেষ্টা করুন।

২। ‘শুষ্কতা’ হচ্ছে আরেকটি লক্ষণ। যাদের ত্বক নরমাল অথবা ড্রাই বয়স বাড়ার সাথে সাথে তাদের ত্বক আরও রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে পড়ে।

৩। কিন্তু যাদের ত্বক তৈলাক্ত তাদের স্কিনে বয়সের ছাপ কিন্তু শুষ্কতা দেখে বোঝা যাবে না। আপনার ত্বক যদি অতিরিক্ত তৈলাক্ত হয়ে ওঠে আর লোমকূপ গুলো দিন দিন আকারে বড় হয়ে যায় তবে বুঝতে হবে ত্বক বুড়িয়ে যেতে শুরু করেছে।

৪। আপনার ঠোঁট শুকিয়ে তাতে লাইন পড়ে যাওয়া আর ধীরে ধীরে কালো হয়ে যাওয়াও বুড়িয়ে যাবার আরেকটি লক্ষণ।


৫। আপনার নখ আর চুল যদি ভাঙতে থাকে আর রুক্ষ হয়ে ওঠে তবে দেরী না করে আজি সিরিয়াসলি অ্যান্টি-এজিং স্কিন কেয়ারে মনোযোগ দিন।

কীভাবে শুরু করবেন?

স্কিন কেয়ার রেজিমেন মেণটেইন করুন। দিনের বেলা ক্লিণজিং-টোনিং-মশ্চারাইজিং আর রোদে গেলে SPF 40+ PA +++ সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। আর রাতের বেলা ক্লিনজিং-টোনিং এর পর অবশ্যই প্রয়োজন বুঝে ভালো সিরাম বা নাইট ক্রিম ব্যবহার করতে ভুলবেন না।

সঠিক পদ্ধতি

*চোখ- চোখের চারপাশে সবার আগে বয়সের ছাপ পড়ে। তাই সবসময় ভালো ময়েশ্চারাইজিং আই ক্রিম অথবা বিশুদ্ধ আমন্ড অয়েল খুব হালকা হাতে চোখের নিচে, আইলিডে আর পাশের অংশে লাগিয়ে নিন।

*মুখের ত্বক- ত্বকে কোন ধরনের প্রোডাক্ট ব্যবহার করার সময় জোরে জোরে ঘষা বন্ধ করুন। এরজন্য পরে পস্তাতে হবে। হালকা ভাবে চাপড় দিয়ে দিয়ে ক্রিম লাগাবেন। আর যারা মুখে স্ক্রাব ব্যবহার করেন তারা সপ্তাহে দুবারের বেশি আর প্রতিবার এক মিনিটের বেশি সময় নিয়ে স্ক্রাব করবেন না। কোলাজেন সমৃদ্ধ ফেস ক্রিম ব্যবহার করুন।

*চুল- মাথার ত্বক ম্যাসাজ করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। স্টাইলিং প্রোডাক্ট ব্যবহার করা থেকে দূরে থাকুন। পারতপক্ষে রিবন্ডিং করবেন না। এগুলো নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারা ছাড়া আর কিছুই না।

সঠিক পদক্ষেপ না নিলে যা হতে পারেঃ

যেহেতু আমি জানি বাংলার মেক-আপ প্রিয় নারীরা স্কিন কেয়ার কে অগ্রাহ্যই করতে চাই তাই শেষ করার আগে বলে দেই যদি আপনি সঠিক সময়ে সঠিক স্কিন কেয়ার না করেন ও আপনার ত্বকের ধরন না বুঝে একটার পর একটা কেমিক্যাল প্রসিডিউর করিয়েই যান তবে আজ থেকে দশ বছর পর আয়নায় তাকিয়ে আপনি কী দেখতে পাবেন-

আপনার বয়স এখন ২৩ কি ২৪ এখন আপনি মনের সুখে ত্বকের উপর অত্যাচার করছেন আর ভাবছেন ‘কই ? কিছুই তো হচ্ছে না। সমস্যা কী ব্লিচ করলে? বা ফেয়ার পলিস করলে?’ কিন্তু আবার ভাবুন… আপনার স্কিনের এখনও নিজেকে রিপেয়ার করার শক্তিটুকু আছে বলে আপনি বুঝতেও পারছেন না কি অনর্থ আপনি করছেন। ২৫ এর পর যখন স্কিনের সেলফ রিপেয়ার ক্ষমতা কমে আসে তখন দেখা যায় চোখের কোণে কুৎসিত ক্রোস ফিট, ঠোটের পাশে লাফ লাইন আর কপালে গভীর বলিরেখা, ঝুলে পড়া পাতলা ত্বক, মেছতার দাগ। মেক-আপ দিয়ে আর কতই বা ঢাকবেন? কে চায় নিজের সাধের ত্বক কে এত তাড়াতাড়ি এমন রুপে দেখতে?

কিন্তু আপনি কি চান বলিরেখা দেখতে পাবার পর আপনার টনক নড়ুক?