আরও বিড়ম্বনায় পড়তে পারেন অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়। গাড়ি দুর্ঘটনায় মডেল সনিকা সিংহ চৌহানের মৃত্যু মামলায় আলিপুর আদালতে যে চারজনের গোপন জবানবন্দি নথিভুক্ত হয়েছিল, তার প্রতিলিপি সোমবার সংগ্রহ করেছে টালিগঞ্জ থানার পুলিশ। আইনজীবীদের একাংশের মতে, এই পদক্ষেপ করে পুলিশ বিক্রমের বিরুদ্ধে ‘কড়া’ ধারা প্রয়োগের পথে এক ধাপ এগলো। কারণ, মত্ত অবস্থায় দ্রুতগতিতে বিক্রম গাড়ি চালানোর জন্যই যে দুর্ঘটনা ঘটেছিল, তার প্রমাণ হিসাবে ওই চারজনের গোপন জবানবন্দিকে পুলিশ ব্যবহার করতে চাইছে। সূত্রের খবর, পরিস্থিতি সব ঠিক থাকলে আজ, মঙ্গলবার অথবা আগামিকাল, বুধবার পুলিশ বিক্রমের বিরুদ্ধে ৩০৪এ (অবহেলাজনিত কারণে মৃত্যু, জামিনযোগ্য) ধারার পরিবর্তে ৩০৪ (অনিচ্ছাকৃত খুন, জামিনঅযোগ্য) ধারায় মামলা শুরুর জন্য চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করতে পারে।
চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এই ‘কড়া’ ধারা প্রয়োগের আবেদন মঞ্জুর করলে বিপাকে পড়তে পারেন বিক্রম। জামিনঅযোগ্য এই ৩০৪ ধারার জেরেই বর্তমানে জেলে রয়েছেন সংগীতশিল্পী কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্যের গাড়ির চালক অর্ণব রাও। প্রায় দু’মাসের বেশি সময় ধরে জেলে রয়েছেন তিনি। তবে ৩০৪এ ধারা থেকে ৩০৪ ধারা যুক্ত হলে অভিনেতার ভবিয্যত্ কী হবে তা নিয়ে তৈরি হতে পারে আইনি জটিলতা। আইনজীবীদের একাংশের মতে, পুলিশ নতুন করে এই পদক্ষেপ করলে গ্রেফতারি এড়াতে বিক্রমের জন্য আইনি লড়াইয়ের পথ খোলা থাকবে। তিনি ৩০৪ ধারা খারিজের জন্য কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করতে পারেন। সেই সঙ্গে আগাম জামিনের আবেদনও জানাতে পারেন তিনি। অনেকের মতে, বর্তমানে অভিনেতার বিরুদ্ধে ৩০৪এ ধারায় মামলা চলছে। তিনি জামিনে মুক্ত। এর মাঝে ফের তাঁর বিরুদ্ধে জামিনঅযোগ্য ৩০৪ ধারা প্রয়োগ যদি করা হয় তবে পূর্বের জামিন খারিজের জন্য আগে সক্রিয় পদক্ষেপ করতে হবে পুলিশকে। এর জন্য পুলিশকে আলিপুর জেলা জজ বা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে হবে। এ প্রসঙ্গে আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী বলেন, ‘‘৩০৪ ধারা যুক্ত হলেও পুলিশকে প্রথমে জামিন খারিজের জন্য পদক্ষেপ করতে হবে। জামিন খারিজ না করলে পুলিশের পক্ষে নতুন ধারার সুবিধা পাওয়া নিয়ে সমস্যা হতে পারে।’’ আবার আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘জটিলতার কোনও কারণ নেই। এমন ধারা পরিবর্তন বা যুক্ত প্রায়শই হয়। পূর্বে হাল্কা ধারার জন্য জামিন মিললেও তা খারিজ করে হেফাজতে নেওয়া নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না।’’
-খবর এবেলা