আপনি আছেন » প্রচ্ছদ » খবর

স্বর্ণযুগের সমাপ্তি, অবসরে শেবাগ

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষনা দিয়েছেন ভারতীয় তারকা ব্যাটসম্যান বিরেন্দ্র শেবাগ। প্রায় আড়াই বছর আগে তিনি সর্বশেষ ভারতের হয়ে মাঠে নেমেছিলেন। এর মাধ্যমে বর্ণাঢ্য এক ক্যারিয়ারের সমাপ্তি ঘটলো যেখানে তিনি রেখে গেছেন ১৭,২৫৩ রান। একমাত্র ভারতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ত্রিপল সেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন শেবাগ এবং সেটা তিনি দুবার অর্জন করেছেন।


১০৪ টেস্ট ম্যাচে ৮৫৮৬ রান নিয়ে শেবাগ ভারতের সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যানের তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছেন। ওয়ানডেতে তার রানসংখ্যা ৮২৭৩, সেঞ্চুরির সংখ্যা ১৫টি। সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর ২১৯ যা তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। ১৯টি টি২০ ম্যাচেও ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান করেছেন ৩৯৪ রান। সব ফর্মেটে এই রান ছাড়াও শেবাগ টেস্টে ৪০টি ও ওয়ানডেতে ৯৬টি উইকেট দখল করেছেন।


১৯৯৯ সালে ওয়ানডে অভিষেক হবার পরে শেবাগ মূলত সীমিত ওভারের ম্যাচই খেলতেন। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে সুযোগ পাবার পর থেকে তিনি টেস্ট ক্রিকেটে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের ভূমিকাই পাল্টে দেন। ২০০২ সালে লর্ডস টেস্টে সাবেক কোচ জন রাইট ও সৌরভ গাঙ্গুলির হাত ধরে দিল্লীর এই ব্যাটসম্যান টেস্টে ইনিংস ওপেন করার সুযোগ লাভ করেন। এর আগের বছর ৬ নম্বরেও তার টেস্ট অভিষেক হয়েছিল। অভিষেকেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চমৎকার সেঞ্চুরি তাকে টপ অর্ডারে নিয়ে আসে।

ওপেনার হিসেবে প্রথম ইনিংসে ৮৪ রান করে তিনি নিজের জায়গা স্থায়ী করে নেন। ওপেনার হিসেবে তার স্ট্রাইক রেট ছিল ৮২.২৩ যা যেকোন ব্যাটসম্যানের জন্য সর্বোচ্চ। ২০০৩-০৪ মৌসুম ছিল তার ক্যারিয়ারের সেরা বছর। নয় টেস্টে ১০৪০ রান যার মধ্যে ছিল এমসিজি টেস্টের এক দিনেই ১৯৫ রান। তাছাড়া মুলতানে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৭৫ বলে করেছিলেন ভারতের হয়ে সর্বপ্রথম ত্রিপল সেঞ্চুরিসহ ৩০৯ রান। এছাড়া টেস্ট ক্যারিয়ারে মুম্বাইয়ে দুইবার, গল, কানপুর, কলকাতা, কলম্বো ও আহমেদাবাদে ম্যাচজয়ী ইনিংস এখনো সকলের স্মৃতিতে উজ্জ্বল। ২০০৮ সালে এডিলেডে দ্বিতীয় ইনিংসে তার করা ১৫১ রানে ভর করে ভারত ম্যাচটি ড্র করেছিল। টেস্টে ২৩টি সেঞ্চুরির মধ্যে ১৪টিই ছিল ১৫০ এর উপরে। মুলতান ছাড়াও অপর ত্রিপল সেঞ্চুরিটি করেছিলেন ২০০৮ সালে চেন্নাইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। এর ফলে আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানটিও দখল করেছিলেন। ২০১২ সালের শেবাগ নবম ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্ট খেলার কৃতিত্ব দেখান।


ওয়ানডেতে অবশ্য তিনি নিজেকে খুব একটা মেলে ধরতে পারেননি। ২৫১ ম্যাচে ৩৫.০৫ গড়ে তার করা ১৫টি সেঞ্চুরির ১৪টি এসেছে ভারতের জয়ে। প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি করেছিলেন ২২ বছর বয়সে মাত্র ৬৯ বলে। ২০১১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে করেন ডাবল সেঞ্চুরি। ২০০৩ সালে বিশ্বকাপ ফাইনালে যাওয়া ভারতীয় দলের সদস্য হলেও ২০১১ সালে শিরোপা জয়ের স্বাদ পান। ২০০৭এ প্রথম আইসিসি টি২০ বিশ্বকাপ জয়ী দলেও তিনি ছিলেন। ২০০৩-২০১২ পর্যন্ত ১২টি ওয়ানডে ও চারটি টেস্টে অধিনায়কত্ব করেছেন। জোহানেসবার্গে ২০০৬ সালে ভারতের প্রথম টি২০তে শেবাগ দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।


দুই বছর আগে মার্চে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হায়দ্রাবাদে সর্বশেষ টেস্ট ও একই বছর জানুয়ারিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডে খেলেছেন। ২০১২ সালে টি২০ দল থেকে জায়গা হারান শেবাগ।