আপনি আছেন » প্রচ্ছদ » খবর

প্রেগনেন্ট অবস্থায় কি কি খাবার খাওয়া নিষেধ?

গর্ভাবস্থায় খাবার গ্রহণে কিছু বিধি নিষেধ মেনে চলে আপনি নিজেই সুস্থ শিশু ও নিরাপদ প্রসব নিশ্চিত করতে পারেন। চলুন দেখে নেই গর্ভাবস্থায় কী কী খাবার গ্রহণ করা উচিত নয়।

ডিম

পুষ্টিগুণের বিচারে ডিমকে গর্ভাবস্থায় খাবার তালিকার উপরে রাখা হয়। কাঁচা বা আধা সিদ্ধ ডিম গর্ভধারিণী মা এবং বাচ্চা উভয়ের জন্য ক্ষতিকর। গর্ভাবস্থায় ডিম অবশ্যই ভেজে, সম্পূর্ণ সিদ্ধ বা রান্না করে খাবেন। কাঁচা ডিমের তৈরি খাবার (যেমনঃ মেয়োনিজ) গ্রহণ করা থেকেও বিরত থাকুন।

শাকসবজি এবং ফল ধুয়ে খান। শাকসবজি এবং ফল খাবার আগে অবশ্যই ভাল করে ধুয়ে খাবেন। শাকসবজি বা ফলের গায়ে বিভিন্ন পরজীবী (টক্সোপ্লাজমা) থাকে যা বাচ্চার জন্য ক্ষতিকর।

পেঁপে

পেঁপে পাকা হলে কোন সমস্যা নেই তবে কাঁচা বা আধা-পাকা পেঁপের মধ্যে ল্যাটেক্স থাকে যা ইউটেরিন কন্ট্র্যাকশন ঘটায়; এটি গর্ভের শিশুর ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে। সেজন্যই গর্ভাবস্থায় খাবার নির্ধারণে কাঁচা বা আধা পাকা পেঁপে এড়িয়ে চলুন।

আনারস

এর মধ্যে থাকে ব্রোমেলিন যা গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

কাঁচা মাংস

কাঁচা মাংসের মধ্যে থাকে স্যালমোনেলা, কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া এবং টক্সোপ্লাজমোসিস যা গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। গর্ভাবস্থায় খাবার নির্বাচনে টাটকা রান্না করা মাংসকে প্রাধান্য দিন। মাংস পুনরায় গরম করলে তাতে লিস্টেরিয়া সংক্রমিত হতে পারে যা গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

মারকারি যুক্ত মাছ

গর্ভাবস্থায় খাবার তালিকায় মাছ না থাকলে চলে? কিন্তু এই মাছ নির্ধারণেও চোখ কান খোলা রাখতে হবে। টাইল মাছ, তিমি মাছ, সোর্ডফিস এবং ম্যাকরেল মাছে প্রচুর পরিমাণে মারকারি পাওয়া যায় যা বাচ্চার জন্য ক্ষতিকর। অন্যান্য সামুদ্রিক খাবারও রান্না করে খেতে হবে। সামুদ্রিক খাবার কাঁচা খাওয়া গর্ভধারিণী মা এবং বাচ্চা উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর।

অপাস্তুরিত জুস

গর্ভাবস্থায় ফলের জুস খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী কিন্তু সেটা অবশ্যই পাস্তুরিত হওয়া উচিত।

অপাস্তুরিত দুধ

কাঁচা এবং অপাস্তুরিত দুধ এবং এর তৈরি কোন খাবার (পনির) গর্ভবতী মায়ের জন্য খুবই ক্ষতিকর এমনকি এর কারণে বাচ্চার মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এ সময় পাস্তুরিত দুধ বা এর তৈরি দই খেতে পারেন। গর্ভাবস্থায় খাবার তালিকায় অপাস্তুরিত দুধ না রাখাই ভাল।

ধূমপান ও মদ্যপান

গর্ভাবস্থায় ধূমপান এবং মদ্যপান অবশ্যই বর্জন করা উচিত। এটি বাচ্চার মস্তিস্ক বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় (চা, কফি, চকলেট) দিনে ২০০ মিঃ গ্রাঃ এর বেশি খাওয়া যাবে না।

মধু

গর্ভাবস্থায় মধু ক্লস্ট্রিডিয়া স্পোর দ্বারা সংক্রমিত হতে পারে যা বাচ্চাদের খাবারে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। সুতরাং গর্ভাবস্থায় মধু পারতপক্ষে না খাওয়াই শ্রেয়।

ভেষজ চা বা অন্যান্য দ্রব্যাদি

ভেষজ চা বা অন্যান্য দ্রব্যাদি স্বাস্থ্যের জন্য ভাল কিন্তু অতিরিক্ত গ্রহণ করলে গর্ভবতী মায়ের উপর এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।

বাদাম

বাদাম অ্যালার্জির সংক্রমণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে গর্ভাবস্থায় বাদাম খেলে শিশুর শরীরে অ্যালার্জি হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে।

সতর্কতা

গর্ভাবস্থায় খাবার তালিকায় তাজা খাদ্য রাখতে চেষ্টা করুন। রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষিত বা অতিরিক্ত গরম খাবার না খাওয়াই ভাল। গর্ভাবস্থায় খাদ্যাভাসে যেকোনো খাবার গ্রহণ বা বর্জনের পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভাল।