আপনি আছেন » প্রচ্ছদ » খবর

সাবেক ইউপি সদস্যকে মারধর করে সাড়ে চার লাখ টাকা ছিনতাই

নীলফামারী: নীলফামারীর সৈয়দপুরে সাবেক ইউপি সদস্যকে বেদম মারধর করে চার লাখ ৬০ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন সাবেক ওই ইউপি সদস্য। আহত ও টাকা ছিনতাইয়ের শিকার হওয়া ওই ইউপি সদস্যের নাম মো. মিলন (৩৪)। তিনি উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউপির হুগলীপাড়া গ্রামের মৃত নজরুল ইসলাম নজুর পুত্র ও একই ইউপির ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার।

জানা যায়, কাশিরাম বেলপুকুর ইউপির হাজারীহাটে মিলনের সার, কীটনাশক, ধান, ভুট্টা, গম ক্রয়-বিক্রয়ের দোকান রয়েছে। গত ৪ জুলাই রাত আনুমানিক ১১টায় নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে হুগলীপাড়াস্থ বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন তিনি। এসময় তার সাথে ব্যবসার ৪ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা ছিল। কিন্তু হাজারীহাট বাজার ত্যাগ করার পূর্বেই হুগলীপাড়ার মৃত আফাজ উদ্দিনের পুত্র ওহিদুল ইসলাম (৫০) ও তার দুই ছেলে আব্দুর রশীদ সবুজ (২৮) ও আ. কুদ্দুস (২৪) মিলনের গতিরোধ করে। পথ আটকানোর কারণ জানতে চাইলে ওহিদুলের নের্তৃত্বে তার দুই ছেলে মিলনকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। এসময় মিলনের আর্তচিৎকারে উপস্থিত স্থানীয়রা এগিয়ে এসে উভয় পক্ষকে আলাদা করা সহ তাদের বাড়িতে যেতে অনুরোধ করেন। উপস্থিত স্থানীয়দের অনুরোধে মিলন হাজারীহাট থেকে হুগলীপাড়াস্থ বাড়ির দিকে রওনা দেন।

মিলন বলেন, ‘হাজারীহাট বাজার থেকে হুগলীপাড়া যাওয়ার মাঝপথে নির্জন রাস্তায় রাত আনুমানিক ১২টার দিকে পেছন থেকে আমার মাথায় লাঠি দিয়ে প্রচন্ড জোরে আঘাত করেন সবুজ। এরপর আমি মাটিতে পড়ে গেলে ওহিদুল ও তার অপর ছেলে কুদ্দুসসহ অজ্ঞাত আরো কয়েকজন আমার সামনে এসে লাঠি দিয়ে বেদম মারধর করতে থাকে। প্রচন্ড মারের চোটে আমি অজ্ঞান হয়ে গেলে ওরা আমাকে মৃত ভেবে আমার সাথে থাকা আমার ব্যবসার ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়। মিলন আরো বলেন, আমার উপর অতর্কিত হামলার পর আমি অজ্ঞান হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকি। এবং রাত গভীর হওয়ার পরও বাসায় না ফেরায় আমার পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করলে অজ্ঞান অবস্থায় রাত আনুমানিক ৩টার সময় আমাকে তারা রাস্তায় খুঁজে পায়। সেখান থেকে উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে আমার মাথায় পানি ঢালা ও অন্যান্য চেষ্টা করেও আমার জ্ঞান ফেরাতে ব্যর্থ হলে আমার পরিবারের লোকজন ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। এরপর তারা কাল বিলম্ব না করে এম্বুলেন্স ডেকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আমাকে ৫ জুলাই সকাল ৭টায় ভর্তি করায়। তিনি বলেন, আমি মনে করি আমার ব্যবসার টাকা ছিনতাইয়ের জন্যই আমাকে মেরে ফেলে হলেও পরিকল্পিতভাবে ওহিদুল গং আমার উপর হামলা করেছে।

রোবার (৯ জুলাই) সরেজমিনে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, ৪র্থ তলায় পুরুষ বিভাগের ১৫ নং ওয়ার্ডের পেইন কেবিনে মিলন চিকিৎসা নিচ্ছেন। কর্তব্যরত চিকিৎসকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, রোগীর শরীরের আঘাত খুবই গুরতর। শরীরের ¯পর্শকাতর অংশে লাঠি দিয়ে আঘাতের কারণে ওনার সুস্থ হতে আরো সময় লাগবে।

এদিকে এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে ওহিদুল ইসলামের সাথে যোগায়োগ করেও তাকে না পাওয়ায় তার বক্তব্য নেয়া যায়নি। তবে তার দুই ছেলে সবুজ ও আ. কুদ্দুস বলেন, ‘মিলন স¤পর্কে আমাদের চাচা। আমরা তাকে মারধর করিনি কিংবা তার কোন টাকাপয়সা আমরা নেইনি। এটা স¤পূর্ণরুপে মিথ্যাচার। তবে তারা হাজারীহাটে মিলনের সাথে কথা কাটাকাটি ও ধস্তাধস্তির কথা স্বীকার করেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সৈয়দপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, এ ব্যাপারে সৈয়দপুর থানায় অভিযোগ আসলে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।