দিনের বেলা সূর্যের তেজ বাড়ছে। আর রাতের দিকে নামছে পারদ। যা বুঝিয়ে দেয় শীতকাল আর নেই, বসন্তকাল এসে গিয়েছে। আর বসন্তকাল মানেই চিকেন পক্স বা বসন্তরোগ আগমন। কীভাবে ছড়ায় এই রোগ? এর প্রতিষেধকই বা কী? কীভাবে বুঝবেন আপনি চিকেন পক্সে আক্রান্ত? জেনে নিন এই প্রতিবেদনে-
মূলত ভ্যারিসেলা-জস্টার ভাইরাসের দ্বারাই একজনের শরীর থেকে অন্যের শরীরে ছড়ায় চিকেন পক্স। শীতের শেষে এবং বসন্তের শুরুতে আবহাওয়ার পরিবর্তনের সময় ভাইরাসটি বাতাসে ভাসে৷ অন্য সময়ও হতে পারে৷ ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত পক্স হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি৷ তবে ছোটবেলায় একবারও পক্স না হলে পরে যেকোনও বয়সেই কিন্তু হতে পারে৷ জ্বর, মাথার যন্ত্রণা, কোমরে-পিঠে ব্যথা, দুর্বলভাব ও ফ্লুয়ের মতো লক্ষণ থাকে৷ দু-একদিন জ্বর ১০০ থেকে ১০৩ ডিগ্রির মধ্যে থাকে। তারপর পিঠ, বুক, কপাল, হাত, মুখে ব়্যাশ বের হয়। ব়্যাশ বেরনোর দু’দিন আগে থেকে সেটির ছাল ওঠার শুরু পর্যন্ত একজন রোগীর দেহ থেকে অন্যজনের দেহে ভাইরাস ছড়িয়ে যায়৷
রোগের হাত থেকে মুক্তি
পক্সে আক্রান্ত বাচ্চার আনুষাঙ্গিক কোনও সমস্যা না থাকলে লক্ষণ অনুযায়ী সাধারণ জ্বর, অ্যালার্জির চিকিৎসাই করা হয়৷ কিন্তু শিশু অথবা বয়স্কদের পক্সের সঙ্গে লিউকোমিয়া, ক্যানসার অথবা অনান্য অসুখের চিকিৎসা চললে অ্যান্টি ভাইরালথেরাপি করতে হবে৷ ওষুধ দিয়ে তিন ধরনের অ্যান্টি ভাইরাল থেরাপি করা হয়৷
ভ্যাকসিন
চিকেন পক্সের প্রধান ভ্যাকসিন ‘ওকা ভ্যাকসিন’৷ ১২-১৫ মাস বয়সে এর প্রথম ডোজ নিতে হবে৷ দ্বিতীয়টি নিতে হবে ৪ থেকে ৬ বছর বয়সের মধ্যে৷ যদি ১২-১৫ মাস বয়সে প্রথম ডোজ নেওয়ার পর পক্স হয়ে যায় সেক্ষেত্রে আর দ্বিতীয় ডোজ নিতে লাগে না৷ কিন্তু পক্স না হলে দু’বারই ডোজ নিতে হবে৷ যাদের ১৩ বছর বয়স পর্যন্ত পক্স হয়নি এবং ভ্যাকসিনও নেওয়া নেই, তাদের ক্ষেত্রে এই দুটি ডোজই ১৩ বছরের পর যে কোনও বয়সে একমাসের ব্যবধানে নিয়ে নিতে হবে৷
যাঁদের কখনই পক্স হয়নি তাঁরা রোগীর থেকে দূরে থাকুন৷ কারণ ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, রোগীর সংস্পর্শে আসার জন্যই অনেকে পক্সে আক্রান্ত হয়৷ রোগীর সংস্পর্শে থাকতে হলে পরিবারের বাকিদের অ্যান্টিভাইরাল থেরাপি প্রয়োজন৷ রোগীর ব়্যাশ বেরনোর ৯৬ ঘণ্টার মধ্যে পরিজনদের এই থেরাপি নিতে হবে৷ বাড়িতে প্রিম্যাচিওর বেবি, অন্তঃসত্ত্বা মহিলা থাকলে ‘ভ্যারিসেলা জস্টার ইমিউনো গ্লোবিউলিন’ নামে প্রতিষেধক যত শীঘ্র সম্ভব নিতে হবে৷
হোমিওপ্যাথি মতে, প্রতিরোধক হিসাবে Veriolinum, Malandrinum ওষুধ এক অথবা দু’ডোজ খেলে উপকার মিলবে৷ আবার পক্স রোগীরাও হোমিওপ্যাথিতে চিকিৎসা করতে পারেন৷ তবে সে ক্ষেত্রে রোগীর বয়স ও লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা ওষুধ দেন৷