কিছুদিন থেকে ভোরের কুয়াশাভেজা সকাল দেখে ঘুম ভাঙে দেশবাসীর। শেষ রাতের শীত শীত আবহাওয়ায় ঘুম ভাঙতেই চায় না যেন। বাতাসে আর্দ্রতা কম। ফলে আবহাওয়া হয়ে উঠেছে শুষ্ক ও রুক্ষ। এই শুষ্ক আবহাওয়ার প্রভাব পড়ে আমাদের ত্বকের ওপর। ত্বকের আর্দ্রতা শুষে নেয় শীতের বাতাস। ত্বক শুষ্ক হয়ে খসখসে ভাব হয় এবং চামড়া মরে ফেটে যায়। মাথায় খুশকির উপদ্রব বাড়ে। ত্বককে শুষ্কতার হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য শীতের শুরু থেকেই ত্বকের যত্নে সচেতন হতে হবে। শীতে ত্বকের শুষ্কতা দূর করার জন্য দরকার ভালো ময়েশ্চারাইজার বা কোল্ড ক্রিম, গ্লিসারিন বা পেট্রোলিয়াম জেলি। শীতকালের জন্য ভালো ময়েশ্চারাইজার যা ত্বককে শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা করে কোমল ও মসৃণ রাখে।
ত্বকে তেলের প্রলেপ দিলেও ভালো হয়, তবে অলিভ অয়েল সবচেয়ে ভালো। গোসলের পর গায়ে মাখতে হবে, গোসলের আগে নয়। গোসল সারার পর তোয়ালে দিয়ে গায়ের পানি মুছে নিয়ে এরপর গ্লিসারিনের সঙ্গে পানি মিশিয়ে শরীরে মেখে নিতে হবে। গোসলের সময় কিছু পানি ত্বক শুষে নেয়, এই পানিটুকু দীর্ঘ সময় ত্বকে আটকে রাখতে পারলে ত্বকের সজীবতা রক্ষা পায়। আটকে রাখার কাজটি করে এই ময়েশ্চারাইজার। গোসলের পর দেরিতে ময়েশ্চারাইজার লাগালে ত্বকের শুষে নেওয়া পানিটুকু বাতাসে উড়ে যাবে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও গোসলের পরই বেবি অয়েল, গ্লিসারিন বা ভেসলিন দিয়ে ম্যাসেজ করা ত্বকের জন্য উপকারী এবং আরামদায়কও বটে। শীতকালে ত্বকে অল্প সাবান ব্যবহার করা উচিত। যদি সাবান ব্যবহার করতেই হয় তবে গ্লিসারিনযুক্ত বা অধিক চর্বিযুক্ত সাবান ব্যবহার করাই উত্তম।
শীতের শুরু থেকেই রাতে ঘুমানোর আগে ত্বকে নিয়মিত অলিভ ওয়েল ম্যাসেজ করে নিলে ত্বক থাকবে মসৃণ ও নমনীয়। শীতকালে ঠোঁটও দ্রুত শুষ্ক হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় বারবার জিভ দিয়ে ঠোঁট ভেজানো বা ঠোঁটের চামড়া উঠানো উচিত নয়। এতে ঠোঁট আরও বেশি শুষ্ক হবে। যাদের ঠোঁট ফেটে যায় বা ঠোঁটের শুষ্কতা রোধে খাবার পরই ঠোঁটে লিপজেল, ভেসলিন বা গ্লিসারিন লাগাতে হবে। শীতকালে যাদের পায়ের গোড়ালি ফাটে তাদের পায়ের জন্য অবশ্যই আলাদা যত্ন নিতে হবে। সপ্তাহ দুএকদিন একটি গামলায় হালকা গরম পানি নিয়ে তাতে একটু শ্যাম্পু মিশিয়ে পা দুটি ভিজিয়ে রাখতে হবে আধাঘণ্টার মতো। তারপর ঘঁষে পরিষ্কার করে ধুয়ে শুকানোর সঙ্গে সঙ্গে ভেসলিন বা গ্লিসারিন লাগিয়ে রাখতে হবে। হাতের চামড়া ফেটে গেলে একই পদ্ধতি প্রয়োগ করবেন। রাতে ঘুমানোর আগে পা ধুয়ে-মুছে গ্লিসারিন বা পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে তারপর মোজা পরে নিতে হবে। এতে পায়ের চামড়া নরম ও কোমল থাকবে। পায়ের গোড়ালি বেশি ফেটে গেলে এবং হাঁটাহাঁটিতেতে কষ্টকর হলে চর্ম বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। শীতকালে ঠাণ্ডা আবহাওয়াও চুলকানির কারণ হতে পারে। ত্বকের সজীবতা ও প্রাণবন্ত ভাব ধরে রাখতে চাইলে টাটকা শাকসবজি, ফলমূল খেতে হবে। এই শীতে দেখা দেয় টাটকা শাকসবজি আর ফলমূলের সমারোহ। রেটিনল তথা ভিটামিন এ ও মিনারেলসমৃদ্ধ সবুজ সবজি যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, লালশাক,মুলাশাক, মিষ্টিকুমড়া, বরবটি ইত্যাদি।