আপনি আছেন » প্রচ্ছদ » খবর

কুড়িগ্রাম ও রংপুরের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জে অবনতি

দেশের উত্তর অঞ্চলের বর্তমান বন্যা পরিস্থিতি ব্রহ্মপুত্র নদীর উজানের অংশে (কুড়িগ্রাম, রংপুর) উন্নতি হলেও জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জে পরিস্থিতি অবনতিশীল রয়েছে। এই বন্যা দেশের মধ্যাঞ্চল ও দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চলে বিস্তৃতি লাভ করার আশংকা রয়েছে। গঙ্গা অববাহিকার পানি বৃদ্ধি পেলেও তা বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মধ্যাঞ্চলের ঢাকার চতুর্দিকের ৫টি নদীর পানি বিপদসীমার ৩৮ সে.মি হতে ১৩৬ সে.মি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে । বাংলাদেশের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ কথা জানানো হয়। দেশের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি প্রবাহের ৯০টি সমতল স্টেশনের পর্যবেক্ষন অনুযায়ী ৬০টি পয়েন্টের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে, হ্রাস পেয়েছে ২৬টি পয়েন্টে এবং ৪টি পয়েন্টের পানি প্রবাহ অপরিবর্তিত রয়েছে। বুধবার সকাল ৯ টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় ৯০টি সমতল স্টেশনের পর্যবেক্ষন অনুযায়ী ২৯ পয়েন্টের পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র-যমুনার ভারতীয় অংশের আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টায় গড়ে ২৫ সেন্টিমিটার পানি হ্রাস পেতে পারে । বাংলাদেশ অংশের উজানে (নুনখাওয়া, চিলমারী) আগামী ৪৮ ঘণ্টায় হ্রাস অব্যাহত থাকবে। ভাটির অংশে, বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছে যা আগামী ২৪ ঘন্টায় কমতে শুরু করবে এবং সারিয়াকান্দি ও সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে আগামী ২৪ ঘন্টায় স্থির হয়ে পরবর্তীতে হ্রাস পেতে শুরু করবে। এদিকে গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতলে বৃদ্ধি আগামী ৭২ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকবে, তবে তা বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হবে। এই অববাহিকার উজানে নেপালে ও বিহারে বন্যা পরিস্থিতি থাকার ফলে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে ।

মেঘনা অববাহিকার নদীর পানি আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টায় হ্রাস অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশের উজানের তিনটি অববাহিকার মধ্যে গঙ্গায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে, ব্রহ্মপুত্রের উজানের তিনটি পয়েন্টে (গোহাটি, পান্ডু,গোয়ালপাড়া) পানি হ্রাস পাচ্ছে ও ধুবরী পয়েন্ট পানি স্থিতিশীল রয়েছে। অপরদিকে মেঘনা অববাহিকায় পানি হ্রাস অব্যাহত আছে। আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর ভারতীয় অংশের গোহাটিতে (বাংলাদেশ সীমান্ত হতে ১৮০ কি.মি. উজানে) ২৯ সে.মি, পান্ডুতে (বাংলাদেশ সীমান্ত হতে ১৬০ কি.মি. উজানে) ২৪ সে.মি , গোয়ালপাড়ায় (বাংলাদেশ সীমান্ত হতে ৯০ কি.মি. উজানে) ৯ সে.মি হ্রাস পেয়েছে এবং ধুবরীতে (বাংলাদেশ সীমান্ত হতে ২৫ কি.মি. উজানে) ৩ সেমি. বৃদ্ধি পেয়েছে তবে গতকাল সন্ধ্যা হতে ধুবরী পয়েন্টে পানি স্থিতিশীল রয়েছে । বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ব্রহ্মপুত্রের কুড়িগ্রামের নুনখাওয়া ও চিলমারী পয়েণ্টে পানি হ্রাস পেয়েছে, বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে স্থিতিশীল রয়েছে এবং সারিয়াকান্দি, সিরাজগঞ্জ, আরিচা পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে । মেঘনা অববাহিকার ভারতীয় অংশে পানি হ্রাস অব্যাহত রয়েছে , ফলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মেঘনা অববাহিকার অধিকাংশ নদীর পানিও হ্রাস অব্যাহত আছে। দেশের উত্তরাঞ্চলের ব্রহ্মপুত্র-যমুনা অববাহিকার (উজানের অংশ ব্যতীত) বন্যা পরিস্থিতি অবনতিশীল রয়েছে। তিস্তা-ধরলা-দুধকুমার অববাহিকার নদীর পানি হ্রাস অব্যাহত রয়েছে, এই অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত থাকবে । গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও তা বর্তমানে বিপদসীমার প্রায় ০.৭৫ থেকে ১.৫০ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মেঘনা অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতি আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় উন্নতি অব্যাহত থাকবে ।