আপনি আছেন » প্রচ্ছদ » খবর

ডেঙ্গু নির্ণয়ে যন্ত্র বাজারে!

ডেঙ্গু জ্বর এখনও এক আতঙ্কের নাম। বাংলাদেশে এ যাবত   এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন অনেকে।আর এই মারা যাওয়ার কারণ হিসেবে চিকিৎসকরা বলছেন সময়মতো রোগটি নির্ণয় করতে না পারা। তাদের মতে রোগ নির্ণয় করতে না পেরে অনেক সময় ভুল ওষুধ প্রয়োগ করা হয়, ফলে এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় মারা যাচ্ছেন অনেকে।

তবে এবার সেই অনিশ্চয়তা থেকে মুক্ত হওয়ার সুযোগ এসেছে। দেশের বাজারেই পাওয়া যাচ্ছে ডেঙ্গু নির্ণয়ের আধুনিকতম যন্ত্র। ডেঙ্গু জ্বরের এনএসআই এন্টিজেন ও এলজিজি/এলজিএম এন্টিবডির সমন্বিতভাবে পরীক্ষা করার যন্ত্র বাজারে এনেছে বাংলাদেশ কানাডার যৌথ কোম্পানি ওএমসি হেলথ কেয়ার প্রাইভেট লিমিটেড। নির্মাতারা যন্ত্রটির নাম দিয়েছেন কিউডিটেক্ড ।

তবে বাংলাদেশের সর্বত্র এই যন্ত্রটি পাওয়া যাবে আর কয়েক দিয়ে পরেই, রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে চলতে থাকা তিন দিনব্যাপী চিকিৎসা,স্বাস্থ্যসেবা,হাসপাতাল সামগ্রী ও সরবরাহ খাতের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী শেষে।

কোম্পানিটি জানিয়েছে,এই যন্ত্রের সাহায্যে দ্রুত ও নিঁখুত ফলাফল পাওয়া যাবে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক ডেঙ্গু সংক্রমনের পার্থক্য বোঝা যাবে। যাবে দ্রুততার সাথে এনএসআই এন্টিজেন ও এলজিজি/এলজিএম এন্টিবডির সমন্বিত পরীক্ষা করা । বিভিন্ন রকম ডেঙ্গু জ্বর সৃষ্টি করে এমন চারটি সেরোটাইপ (Type-1, Type-2, Type-3, Type-4 ) এর মধ্যে পার্থক্যে নির্নয় করা যাবে।

তারা আরও জানায়,এর মাধমে মাত্র তিনটি ধাপেই ফলাফল পাওয়া যাবে। দুই থেকে ত্রিশ ডিগ্রী তাপমাত্রায় এটি রাখা যাবে। দুই বছর বিক্রয়োত্তর সেবাও দেবে তারা।

প্রসঙ্গত, আমাদের দেশে সাধারণত মার্চ-আগস্ট মাসে ডেঙ্গু জ্বরের বিস্তার ঘটে । ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত জ্বর। অন্যান্য ভাইরাল রোগের মতো এরও কোনো প্রতিষেধক নেই, টিকাও নেই। লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা দিয়ে এর মোকাবিলা করা হয়। অন্য ভাইরাল ফিভারের মতো এটিও আপনা-আপনি সেরে যায় সাত দিনের মধ্যে। তবে মূল ভয়টা হচ্ছে এর পরবর্তী জটিলতা নিয়ে। ডেঙ্গু জ্বর যদি সময়মতো যথাযথভাবে মোকাবিলা করা না যায়,তবে রোগীর স্বাস্থ্যের দ্রুত অবনতি ঘটতে থাকে এবং দেখা দেয় ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার বা রক্তক্ষরণকারী ডেঙ্গু জ্বর।

রক্তের যে পরীক্ষা জরুরি:

রোগের লক্ষণ দেখে চিকিৎসকের পরামর্শমতো রক্তে বিশেষ অ্যান্টিবডির উপস্থিতি নির্ণয়ের মাধ্যমে সাধারণত ডেঙ্গু শনাক্ত করা হয়।এন্টিজেন ও এন্টিবডির যৌথ পরীক্ষা দ্রুত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক ডেঙ্গু সংক্রমন সনাক্ত করতে পারে।এনএসআই এন্টিজেন ও এলজিজি/এলজিএম এন্টিবডি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক ডেঙ্গু সংক্রমন সনাক্ত করতে পারে।জ্বরের শুরুতেই ডেঙ্গু নিরুপনের জন্য ও রোগীকে সময়মতো ও সঠিক ব্যবস্থাপনার জন্য ডেঙ্গু জ্বর নির্ণয়ে এনএসআই এন্টিজেন ও এলজিজি/এলজিএম এন্টিবডির সমন্বিত পরীক্ষা অতি গুরুত্বপুর্ণ । সাধারণ জ্বর যদি উচ্চ তাপমাত্রায় (১০৩ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি) হয়, তাহলে প্রথমেই রক্তের একটি রুটিন পরীক্ষা করে অণুচক্রিকা বা প্লেটলেট কাউন্ট দেখে নেওয়াটা জরুরি। যদি প্লেটলেট বা অণুচক্রিকা সংখ্যায় এক লাখের কম হয়,তাহলে পরবর্তী পরীক্ষার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

সেমস্ আয়োজিত এ প্রদর্শনীতে প্রায় ১০০টির বেশি ষ্টলে ২৩টি দেশের ৭০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। বাংলাদেশ ছাড়াও অংশ নিচ্ছে ইন্দোনেশিয়া, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, কোরিয়া, সুইজারল্যান্ড, চীন, ডেনমার্ক, জাপান, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, তুরস্ক, ফ্রাস্ন, সিঙ্গাপুর,অষ্ট্রেলিয়া, অষ্ট্রিয়া, আয়ারল্যান্ড,পোল্যান্ড, স্পেন ও আর্জেন্টিনা।